পূর্বধলা, প্রতিনিধি ঃ নেত্রকোনার পূর্বধলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় তৃতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে স্থায়ী ঠিকানা পেয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের চুমকি আক্তার।
বাবা-মা, ভাই-বোন, পরিবার-পরিজন, পাড়াপড়শি এমনকি সমাজেও ঠাঁই নেই। জীবন ধারণের তাগিদে বাজার থেকে সবজি তোলা, দোকান থেকে ৫-১০ টাকা নেয়া, বিয়ে বাড়িতে নেচে-গেয়ে কিছু টাকা নেয়া- এভাবেই পেট চলে। তাতেও আপত্তি অনেকের।
অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ৩৮ বছর বয়সী চুমকি আক্তার সেখানেও ছিল নানা বিড়ম্বনা। তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষ হওয়ায় কেউ বাসা ভাড়া দিতে চাইত না। দিলেও সময়-অসময়ে সমাজের চাপে বের করে দেওয়া হতো।
মানুষ হিসেবে কোনো মর্যাদা ছিল না। রাস্তাঘাটে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের পাশাপাশি নানা কটুবাক্য ছুড়ে দিত লোকজন।
মানুষের কাছে চেয়ে-চিন্তে খাওয়া সমাজের অবহেলায় এভাবেই দিন কাটতো। কথাগুলো সকলের সামনে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলে কেঁদে দিলেন চুমকি আক্তার।
এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক উদ্যোগে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন চুমকি আক্তার।
সে উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মেঘশিমুল গামের একজন বাসিন্দা।
ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে চুমকি আক্তার বলেন, আমাকে ঘর ও জমি দিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, যাদের মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজনও সমাজে স্থান দেননি, সেই তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষদেরও স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য মুজিববর্ষে ঈদ উপহার হিসেবে জমিসহ নিজস্ব ঘরের ব্যবস্থা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ে গৃহ হস্তান্তরের পরেও দেশের অবশিষ্ট সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের থাকার জায়গাসহ ঘরের ব্যবস্থা করে দেবেন। এ লক্ষ্যে গৃহীত প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে পূর্বধলা উপজেলায় ৫৩টি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০টি ও তৃতীয় পর্যায়ে ২২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে মোট ৯৫টি ঘর দেওয়া হয়েছে। এর আওতায় ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও রয়েছেন।
Post Views: ১৯১