পূর্বধলা প্রতিনিধি ঃ নেত্রকোনার পূর্বধলায় মাঠে হলুদ রঙের পাকা বোরো ধান। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে দ্বিগুণ মজুরি দিয়েও কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারছে না চাষিরা। কদিন ধরে আবহাওয়া বিরূপ। প্রায় সারাদিন টিপ টিপ বৃষ্টিতে মাঠে পড়ে থাকা ধান নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটছে কৃষকেরা।
এদিকে রোদ না থাকায় বেজা ধান মাড়াই করে ঘরে উঠালেও সেই ধানে চারা গজাতে শুরু করেছে।
আর মাঠের ধান যদি দুই-তিন দিনের মধ্যে কাটতে না পারে তাহলে সব ধান নষ্ট হয়ে যাবে বলছে কৃষকেরা।
বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের তথ্য অনুযায়ী কাটা প্রতি ১১ থেকে ১২শ টাকা মজুরিতেও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক।
শুধু পূর্বধলায় নয় নেত্রকোনাও বোরো মৌসুমের ধান কাটার শ্রমিক সংকট প্রতি বছরই তীব্রতর হচ্ছে। আর সংকটের কারণে বাড়ছে মজুরিও। ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বোরোর আবাদও ভালো হয়েছে। কিন্তু ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে বেশ কদিন ধরে বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। তাই পাকা ধান জমিতে নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় দিন পার করছেন তারা।
হোগলা এবং জারিয়া ইউনিয়নের কৃষক আবু বকর ও সমশের বলেন, ধান কাটার শ্রমিক খুঁজে পাওয়া যাই। সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত বিঘা বলছি। কেউ আসেনি। এখন ধানের ক্ষেতে অনেক পানি ডুবে যাচ্ছে প্রায়।
সানকিডোয়ারী গ্রামের কৃষক মিজান আকন্দ বলেন, তিন বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। আমার পাকা ধান ঝরে পড়ছে। একদল শ্রমিক পেয়েছিলাম। সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা বিঘা চায়। আবার থাকা-খাওয়া। তাহলে তো ধান বেচে লোকসান হবে।
ঘাগড়া ইউনিয়নে বানেরকান্দা গ্রামের আলমগীর বলেন, ধান ভালোই হয়েছিলো। বৃষ্টি ও শ্রমিক মূল্য অতিমাত্রায় বেশির হওয়ায় ধান কাটা-মাড়াই করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ৬০০-৭০০ টাকা মণ ধান।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে এই বছর ২১ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমরা মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। যাদের ধান কাটা নিয়ে সমস্যা হয় তাদেরকে হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে সহজে ধান বাড়িতে তোলার ব্যবস্থা করছি।
এখন পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেতের ধান কাটা হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পাকা ধান কাটতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।