পূর্বধলা প্রতিনিধি ঃ নেত্রকোনার পূর্বধলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া অবস্থায় ভুয়া চিকিৎসককে অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়। পরে রাতেই দায়িত্ব থাকা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শ্রীকান্ত সরকার বাদি হয়ে মামলা করেন। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম সায়েম আবদুল্লাহ ওরফে জয় (২৫)। সে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার নাওপাই এলাকার মাহতাব উদ্দিনের ছেলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে গতকাল বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত হাসপাতালের ডিউটিরত ছিলেন মেডিকেল অফিসার ডা: জান্নাতুল ফেরদৌস, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শ্রীকান্ত সরকার ও ওয়াডবয় আবু সাঈদ। শুধু একদিন নয় প্রায় সময় জরুরী বিভাগের দায়িত্বরতদের সাথে জয় কাজ করতে দেখা গেছে। জয় ময়মনসিংহের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসাসংক্রান্ত চার বছরের ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেছেন। করোনার কালীন সময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন মাসের ইন্টার্ন করেন। এর পর থেকে তিনি প্রায় সময়ই চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় জরুরি বিভাগে রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া সময় স্থানীয় লোকজন ও কয়েকজন রোগীর স্বজনরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি নিজেকে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেন। পরে বিষয়টি সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এরপর রাত আটটার দিকে পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আজাহারুল ইসলাম বলেন, জয় হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক বা কর্মচারী নন। তিনি চার বছরের ডিপ্লোমা শেষ করে করোনাকালীন সময়ে এই হাসপাতালে এসে তিন মাসের ইন্টার্ন করেন। এ সময় বিভিন্ন কাজে তাঁদের সহযোগিতা করতেন। তবে রোগী দেখার অধিকার তাঁর নেই।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শ্রীকান্ত জানান, জয় প্রায় সময় বিনাশ্রমে আমাদের সহকারী হিসেবে কাজ করতো। তার বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই জানতো। আমাদেরকে স্থানীয় কিছু অসাধু ঔষধ কোম্পানির লোকজন প্রায় সময় ডিস্টার্ব করে তাদের ঔষধ লিখার জন্য। তাই আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তারা পুলিশে খবর দিয়ে জয়কে ধরিয়ে দেয়। মামলার বাদী কেন হয়েছেন জানতে চাইলে বলেন মুলত জয়কে বাঁচানোর জন্য মামলা করতে হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো. আবু হাসান শাহীন বলেন, বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করেছে এবং দায়িত্বরত উপসহকারী মেডিকেল অফিসারকে শোকজ করা হয়েছে।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার ওই ভুয়া চিকিৎসককে আটক করে সোমবার (১৬ মে) কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।