নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভাষা আন্দোলনের অমর স্মৃতি শহিদ মিনার নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়ে সফল হয়েছেন পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স। সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পরামর্শ করে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সাথে নিয়ে উপজেলার ১৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন। দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে ইউএনও’র শতভাগ শহিদ মিনার নির্মাণের এমন উদ্যোগ দেশের মধ্যে উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় জেলার শ্রেষ্ঠ ইউএনও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। বিদ্যালয়গুলোতে এসব শহিদ মিনার নির্মাণ হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা খুশি। শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ স্কুলের শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।
জানা গেছে, বছর দেড়েক আগেও উপজেলার ১৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ২১টি বিদ্যালয়ে আগে থেকেই শহিদ মিনার ছিল। ১৫৪টি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার ছিল না। শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহিদ দিবসে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারতোনা। অধিকাংশ স্কুলে শিক্ষার্থীরা কলাগাছ ও বাঁশ-কাঠ দিয়ে অস্থায়ী শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতো। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বিদ্যালয়গুলোতে শহিদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। ইউএনও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় করেন। পরে স্কুলের তহবিল ও স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় শহিদ মিনার নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ইউএনও’র সার্বিক তত্ত¡বাবধানে প্রায় শতভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই নান্দনিক শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইউএনও স্যার উপজেলায় যোগদানের পর আমাদের সাথে মিটিং করে সব স্কুলে শহিদ মিনারের নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় নবনির্মিত শহিদ মিনারগুলো এখন দৃশ্যমান। এখন থেকে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ভাষা শহিদদের প্রতি কোমলমতি শিশু ও স্থানীয় লোকজন শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, আমি উপজেলায় যোগদানের পর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গিয়ে দেখি শহিদ মিনার নেই। সরকারিভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে শহিদ মিনার নির্মাণের জন্য স্থানীয় জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে শহিদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করি। এখানে সরকারী সরাসরি কোনো অর্থায়ন না থাকার কারণে আমি স্কুল কমিটি ও স্থানীয়দের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনা করে স্কুলগুলোতে শহিদ মিনার নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছি।